উপকারী প্রতিবেশী হওয়া

মাউন্টেন ভিউ ও আশেপাশের এলাকার সাথে আপনার ব্যক্তিগত সম্পর্ক কী?

আমি পালো অল্টোতে বড় হয়েছি। ছোটবেলায় যুক্তরাজ্য থেকে প্রথমে ম্যাসাচুসেটসের কেমব্রিজ হয়ে আমি এখানে আসি। আমার বাবা স্ট্যানফোর্ডের লিনিয়ার অ্যাক্সিলারেটর সেন্টারে পদার্থবিদ ছিলেন। এখানে আসার অন্যতম কারণ ছিল প্রাণবন্ত পরিবেশ, বৌদ্ধিক কৌতূহল ও আগে যা কখনও হয়নি তা করার চেষ্টা। যেমন, স্ট্যানফোর্ডের অ্যাটম স্ম্যাশার তৈরি করার মতো কাজ। আমার বাবা যখন এখানে এসেছিলেন সেই সময় থেকে প্রাণবন্ত পরিবেশ আরও নাটকীয়ভাবে বিস্তার লাভ করেছে।

এই অঞ্চলের বিশেষত্ব সম্পর্কে আমাদের আরও কিছু বলতে পারেন?

এখানে উদ্ভাবনের সংস্কৃতি সংক্রামক, সবসময় সেই দিনের প্রধান বিষয়বস্তু হিসেবে আলোচিত হয়। প্রায় সকলেই পৃথিবীতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ – Google ও Alphabet-এ সেটিই আমাদের উদ্দীপনা যোগায় এবং আমি মনে করি এখানে এসে থাকেন ও কাজ করেন এমন অনেকের ক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য হয়। ভ্যালিতে ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য এক দুর্দমনীয় উৎসাহ লক্ষ্য করা যায় এবং সেই কারণে এটি পৃথিবীর অন্যতম বৈশিষ্ট্যপূর্ণ স্থান বলে আমি মনে করি।

মাউন্টেন ভিউয়ের সাথে Google-এর সম্পর্ক কী?

১৯৯৯ সাল থেকে Google মাউন্টেন ভিউকে নিজের বাড়ি হিসেবে দেখে এবং আমরা আরও অনেক বছর এখানে থাকব বলে আশা করি। Google মাউন্টেন ভিউকে নিজেদের হেড কোয়ার্টার করেছে, কারণ এখানে সবকিছুই আমাদের ভালো লাগে। বে এলাকার সৌন্দর্য্য, কাছাকাছি বিশ্ববিদ্যালয় থাকা, পরিবার-বান্ধব পরিবেশ এবং সিলিকন ভ্যালির কেন্দ্রে বসে কাজ করার সুবিধা আমরা পছন্দ করি।

আমাদের অনেক কর্মচারী মাউন্টেন ভিউতে থাকেন ও কাজ করেন এবং কোম্পানি হিসেবে আমরা ভালো প্রতিবেশী হওয়াকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। বছরের পর বছর ধরে আমরা কমিউনিটিতে লক্ষ লক্ষ ডলার বিনিয়োগ করেছি। STEM শিক্ষায় সাহায্যের জন্য মাউন্টেন ভিউ এডুকেশন ফাউন্ডেশনে গ্রান্ট, মাউন্টেন ভিউ কমিউনিটি শাটলের জন্য ফান্ডের ব্যবস্থা করা, গৃহহীনতা আটকানো ও রোধ করার পরিষেবাকে সাহায্য করা সহ চার্লসটন রিটেনশন বেসিনের মতো প্রাকৃতিক পরিবেশ পুনরুদ্ধার ইত্যাদি এর মধ্যে পড়ে।

একইসাথে আমরা খুবই গর্বিত যে মাউন্টেন ভিউতে অবস্থিত বিভিন্ন সংস্থাতে Google-এর কর্মচারীরা হাজার হাজার ঘণ্টা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেন। কমিউনিটি সার্ভিস এজেন্সি অফ মাউন্টেন ভিউ, সিলিকন ভ্যালি বাইসাইকেল এক্সচেঞ্জ, মাউন্টেন ভিউ স্কুল ও অসাধারণ কম্পিউটার হিস্ট্রি মিউজিয়াম সংস্থা এর মধ্যে পড়ে।

Gradient Canopy ও বে ভিউ কীভাবে এই অঞ্চলের সাথে Google-এর দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক বজায় রেখেছে?

Gradient Canopy মাউন্টেন ভিউতে আমাদের প্রথম, একেবারে গোড়া থেকে তৈরি করা প্রোজেক্ট। উত্তর বেশোর এলাকা নিয়ে শহরের আধিকারিকদের যা স্বপ্ন ছিল তা কীভাবে এই প্রোজেক্টের মাধ্যমে আমরা সবচেয়ে ভালোভাবে বাস্তবায়িত করতে পারি সেই বিষয়ে আমরা অনেক চিন্তাভাবনা করেছি। Gradient Canopy-তে আমরা উদ্দেশ্যমূলক অফিস ডিজাইনের চেষ্টা করেছি যা কমিউনিটিকে আমন্ত্রণ জানায়, প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে স্বচ্ছন্দে মিশে যায়, শহরের অর্থনীতিতে মূল্যবান অবদান রাখে এবং মাউন্টেন ভিউতে থাকতে ও কাজ করতে পছন্দ করে এমন কর্মচারীদের সাহায্য করে।

অতিমারীর আগে থেকেই আমাদের Google অফিসের অন্যতম বিশেষত্ব হল স্বাস্থ্যকর, সাসটেনেবল ও কার্যকরী পরিবেশ। এর মধ্যে কিছুটা "Googley" যোগ করা থাকে। অসাধারণ ডিজাইন লোকজনকে সেখানে থাকতে উৎসাহী করে তোলে। বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পরে সারা পৃথিবীতে আমাদের প্রায় অর্ধেক কর্মচারীর স্বেচ্ছায় অফিসে কাজ করতে ফিরে আসার ঘটনাটি এর প্রমাণ। বর্তমানে আমাদের গোড়া থেকে তৈরি করা প্রোজেক্টের মাধ্যমে এই অঙ্গীকার ও শিক্ষা স্থানীয় কমিউনিটিকে সাহায্য করার কাজে লাগানো হচ্ছে। কমিউনিটির মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো, স্বাস্থ্যকর পরিবেশ গড়ে তোলা ও সহিষ্ণুতা বাড়ানোর কাজে এই জায়গাগুলি কীভাবে ব্যবহার করা যায় সেই বিষয়ে আমরা বিশেষ নজর দিচ্ছি।

Google-এর কাছে "অসাধারণ ডিজাইন" বলতে কী বোঝায় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে পারেন?

অসাধারণ ডিজাইন শুধু একটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে না – এটি সামগ্রিক, সর্বব্যাপী ও ব্যবহারোপযোগী উদ্যোগ। এই উদোগ্যের অংশ হিসেবে সামাজিকতা, শেখা, সহযোগিতা ও মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ-সুবিধা একসাথে এক জায়গায় আসে। এর মাধ্যমে সহযোগিতার জন্য অনুকূল পরিবেশ গড়ে ওঠে – ভার্চুয়ালি বা বাস্তবে।

এগুলি থেকে পাওয়া নির্দিষ্ট আইডিয়া Gradient Canopy ও বে ভিউয়ের ডিজাইনের সময় কোন কোন ক্ষেত্রে কাজে লাগানো হয়েছে?

Google-এর প্রতিষ্ঠাতাদের নীতিবাক্য "ব্যবহারকারীর উপর মনোযোগ দাও তাহলে সবকিছুই ফলো করবে" আমাদের সব অফিসের ডিজাইনের শুরু থেকেই প্রয়োগ করা হয়েছে। এই প্রোজেক্টের ক্ষেত্রে কর্মচারীরা কীভাবে সবচেয়ে প্রোডাক্টিভ ও সৃজনশীল হন সেই বিষয়ে অনেক বছরের গবেষণার ডেটা ও বিজ্ঞানকে আমরা কাজে লাগিয়েছি।

আমরা প্রথম যে আইডিয়াটি এক্সপ্লোর করি সেটা হল অফিসকে ঢেলে সাজানো – কোলাবোরেশন ও মনোযোগ দিয়ে কাজ করার জায়গা এবং উন্মুক্ত ও বদ্ধ জায়গার মধ্যে সম্পর্ক পাল্টে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, আমরা ওপেন ডেস্ক থেকে ক্লোজড নুকের দিকে যাচ্ছি। এর ফলে ওপেন ডেস্কে মনোযোগ দিয়ে কাজ করার সমস্যা এড়ানো যাবে। অন্য দিকে আমরা ঘেরা মিটিং রুম থেকে বিভিন্ন ধরনের খোলা ও পরিবর্তনযোগ্য কোলাবোরেশনের জায়গা তৈরি করার দিকে নজর দিচ্ছি। এটি কোন টিম কী ধরনের কোলাবোরেট করছে তার উপর নির্ভর করবে। অন্য জায়গায় বসে কাজ করছেন এমন সহকর্মীরাও যাতে অংশগ্রহণ করতে পারেন সেই জন্য টেকনোলজি এই ধরনের কোলাবোরেশনের জায়গায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মনোযোগ দিয়ে কাজ করার জায়গার পাশাপাশি টিমের কোলাবোরেশনের জায়গা থাকলে যে কেউ সহজে একটি থেকে আরেকটিতে ট্রানজিশন করতে পারবেন।

পরের আইডিয়া হল বায়োফিলিয়ার মনস্তাত্ত্বিক উপকার। আমরা বহু বছর ধরে বায়োফিলিক ডিজাইন আমাদের অফিসে যোগ করছি – স্বাস্থ্যকর উপাদান, প্রাকৃতিক উপাদান, প্যাটার্ন, সাউন্ডস্কেপিং, থার্মাল কমফর্ট, অ্যাডজাস্ট করা যায় এমন বায়ুপ্রবাহ ও সার্কাডিয়ান আলোর মতো প্রকৃতির গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি অফিসে নিয়ে আসা।

কারও মনে হতে পারে যে এই বায়োফিলিক বা বায়ুর কোয়ালিটি ভালো করার প্রচেষ্টা অত্যন্ত ব্যয়বহুল এক বিলাসিতা, কিন্তু অফিসে প্রকৃতির উপস্থিতি ও স্বাস্থ্যকর বায়ু চলাচলের উপর নজর দেওয়ার অর্থনৈতিক কারণ আছে। এগুলি সবকিছুই কর্মচারীদের জীবনের উন্নতি করতে সাহায্য করে। কর্মচারীরা খুশি, স্বাস্থ্যকর ও তাদের সবচেয়ে ভালো কাজ করতে সক্ষম হলে কোম্পানি সহ সকলে উপকৃত হয়।

এগুলি Google-এর কমিউনিটি-কেন্দ্রিক ডেভেলপমেন্টের লক্ষ্য পূরণে কীভাবে সাহায্য করে?

আমাদের লক্ষ্য হল স্থানীয় কমিউনিটির সাথে যোগাযোগ গড়ে তোলা ও ইন্টিগ্রেট করা। আমরা যে কমিউনিটিতে থাকি ও কাজ করি সেখানকার পরিবেশ প্রথম তলকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। আমাদের ও আমাদের কমিউনিটির আদর্শকে তুলে ধরে এমন জায়গায় বিনিয়োগ করা দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের পক্ষে সহায়ক বলে আমরা মনে করি।

মে, ২০২২-এ প্রথম প্রকাশক করা হয়